আপনি আজ সাদাকে সাদা বলেন কারন আপনি এটাই জেনে বুঝে বড় হয়েছেন, আপনার অভিজ্ঞতায় তাই রংটির নাম সাদা। মনে করুন আগামীকাল থেকে রংটিকে সবাই কালো এবং কালো রংকে সবাই সাদা নাম দিল। এই বিপরীতমূখী নাম আপনার অভিজ্ঞতার ঠিক বিপরীত। কি করবেন ? নতুন নামে ডাকবেন নাকি পুরনো নাম ধরেই আকড়ে থাকবেন। নতুন নামেই ডাকতে হবে। সোস্যাল ডিসকোর্সগুলো এভাবেই তৈরি হয়। আপনার আমার অভিজ্ঞতা সেই ডিসকোর্সগুলোরই প্রতিফলন। আজকের সমাজে দুই ধরনের ডিসকোর্স দেখা যাচ্ছে। এক গতানুগতিক সৃষ্টি, দুই পরিকল্পিত সৃষ্টি। যেটাই হোক না কেন আপনার মননে মস্তিস্কে সেটা এমন ভাবে বসে যাচ্ছে যে আপনি খুব সহজে সেখান থেকে বের হতে পারছেন না। পরিকল্পিত ডিসকোর্সের উদাহরন দিলে বলতে হয় ইসলামিক জিহাদ আন্দোলন। যার জন্ম হয়েছিল আমেরিকান থিংক ট্যাংক থেকে আফগানিস্তানের হাত ধরে। ফলাফল বিশ্ববাসী দেখেছে। ইসলামের জিহাদের যে ডেফিনেশান ছিল তা বদলে কাফির হত্যার ডেফিনেশান বসিয়ে দেয়া হয়েছিল তালিবান আলকায়েদার মস্তিস্কে। মানবতাও তেমনি ডিসকোর্স টুলস যা ব্যবহার করে আমেরিকা অমানবিক যুদ্ধ করতেও পিছপা হয় না। ভারতের বিজেপি হিন্দুত্ব জাতিয়তাবাদও এই ধারায় বাইরে নয়। রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর এই জাতিয়তাবাদ ধারনাটিকে অপছন্দ করে এড়িয়ে গিয়েছেন। কারন তিনি মনে করতেন যে নেগেটিভ শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে কিংবা যুদ্ধ বাঁধাতে এই জাতিয়তাবাদ ডিসকোর্সটিকে ব্যবহার করতে পারে। উদাহরন জার্মানীর নাৎসীবাদ। পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের মধ্যে এমন কিছু ডিসকোর্সের ধারনা চালু করেছে যে আমরা এর বাইরে ভাবতে ভয় পাই কিংবা সেটাকে অনুসরন করাই একমাত্র ধ্যানজ্ঞান বলে মনে করি। ভারতের হিন্দুত্ববাদী দলগুলো অনেকদিন ধরেই মুসলিম বিরোধী অবস্থান নিয়ে এমন আদর্শিক প্রচারনা চালিয়ে আসছিল এবং আজ তারা সফলও বটে। প্রশ্ন হলো আমরা কেন পশ্চিমের শেখানো আদর্শিক মানদন্ডে আমাদের শিক্ষা সংস্কৃতি, ধর্মীয় মূল্যবোধকে বিচার করছি বা হেয় প্রতিপন্ন করছি ? ভারত করছে কারন ওরা ওদের সৃষ্ট ডিসকোর্সকে ফলো করছে কিন্তু আমরা কেন ? আমার বন্ধু তালিকার অনেকেই দেখলাম মহানবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের সমর্থনে লিখছেন, যদিও সংখ্যায় অত্যন্ত কম। বিষয়টি হতাশাজনক কারন চটকদার বিজ্ঞাপনের মত তিনারা বিষয়টিকে চটকাতে খুব মজা পাচ্ছেন। শুধু ভূমিকা পড়েই গল্পটার রিভিউ লিখে দেয়ার মত অবস্থা। তাই বলব শব্দের অপচয় করা বন্ধ করুন। বিষয়টি নিয়ে প্রকৃতই গভীরে যান। দেখুন সত্য কি ?